Flag Counter

ত্বকের যত্ন


আপনার যা জানা উচিত আমরা একজন মানুষের বয়স, স্বাস্থ্য ইত্যাদি বুঝতে চেষ্টা করি তার মুখের দিকে তাকিয়ে। পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং বয়সের ভারে মানুষের মুখে ক্লান্তিবোধ এবং বয়সের ছাপ পড়ে। বয়সের জন্যে ত্বক কুঁচকে যায় এবং মুখে বলি রেখার জন্ম নেয়। কেউ কেউ আবার ত্বকের উপর বয়সের ছাপ পড়তে দিতে নারাজ। এটি একান্তই ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। তবে এসব কিছুর পেছনেই রয়েছে সুস্পষ্ট কিছু শারীরিক ও মানসিক কারণ। ১. পাশ্চাত্যে ট্যানিং অবসর বিনোদনের অবলম্বন হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ট্যানিং হলো শরীরের ত্বককে এমনভাবে তৈরি করা, যাতে রোদ ত্বকের কোনরকম ক্ষতি করতে না পারে। ২. তীব্র রোদের ভেতর ঘোরাফেরা করলে আপনার ত্বকের কতগুলো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমনঃ বিশেষজ্ঞরা বলছেন অতিরিক্ত রোদে পোড়ার কারণে ত্বকে ক্যান্সার হয়, ত্বক কুচকে যায় এবং পিগমেন্ট (ত্বকের বর্ণ নিয়ন্ত্রক পদার্থ) পরিবর্তিত হয়। ৩. অতিরিক্ত তাপে ত্বকের আদ্রতা হ্রাস পায়। রেটিন 'অ'-এর আবিস্কারক ড. কিগম্যান বলেছেন যে, মহিলারা যদি সূর্যালোক এড়িয়ে চলেন তবে তাদের মুখের ত্বক বাহুর ত্বকের মতই টান টান, মসৃণ ও কোমল থাকবে। লোক ভেদে, জাত ভেদে ত্বকের বর্ণও পরিবর্তিত হয়। জন্ম থেকেই যাদের ত্বকের রং ফ্যাকাসে-সোনালী এবং মাথার চুল লাল তাদের রোদে পুড়িয়ে ত্বক কালো করে ফেললে স্বাভাবিক বাদামী রং পেতে পারেন। রোদ পোহানো যাদের খুব প্রিয় তাদের মন খারাপ করার কোন কারণ নেই। তারা রোদের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচার জন্যে ‘সানস্ক্রীন’ টানিয়ে রোদ লাগাতে পারেন যতক্ষণ খুশি। সবারই জানা উচিত বয়স বাড়লে মানুষের ত্বকের চর্বি গঠিত ডারমাসিসের (নীচের সাপোর্টিং অংশ) স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। ডারমাসিসে পানি এবং কিছু কোষ থেকে ‘কোলাজেন’ ও ‘ইলাস্টেন’ তৈরি হয়। ‘কোলাজেন ও ইলাস্টেন ত্বককে দৃঢ় করে এবং স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। যেটিকে আমরা সজীবতা, তারুণ্য ইত্যাদি বলি। বয়স বাড়লে ডারমিস আর আগের মত পানি এবং চর্বি ধরে রাখতে পারে না। নতুন কোষ উৎপাদন কমে যায়, ফলে উপরের ত্বকে পুরনো কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এ সময়ই মানুষের মধ্যে বয়সের ছাপ স্পষ্ট হয়। গালে, গলায়, ত্বকে ভাঁজ পড়ে, চামড়া কুঁচকে যায় এবং বিবর্ণ হয়ে পড়ে। সব সময় মনে রাখবেন অসুখ সারানোর চিকিৎসা করার চেয়ে আগে থেকে অসুখ প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা ভাল। ত্বকের যত্ন নেয়ার তিনটি পয়েন্ট মনে রাখতে হবে। এক. ত্বক পরিষ্কার রাখা, দুই. ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখা, তিন. ত্বক আর্দ্র রাখা। যত্ন সহকারে ত্বক পরিষ্কার করলে মেকআপ, সারাদিনের ময়লা এবং দেহনিঃসৃত ঘাম ইত্যাদি দূর হয়। ত্বকের লোমকূপ পরিষ্কার থাকে। কৃত্রিম উপায়ে ত্বক আর্দ্র রাখলে বয়সজনিত শুষ্কতা হতে পারে না এবং ত্বক সজীব থাকে। আপনি যদি নিয়মিত রোদ এড়িয়ে চলেন, ত্বকের যত্ন নেন, ব্যায়াম করে ত্বককে কর্মক্ষম রাখেন এবং প্রচুর পানি খান তাহলে আপনার ত্বক কখনো স্বাভাবিক সজীবতা ও লাবণ্যতা হারাবে না। আর বয়স আপনাকে কখনও ছুঁতে পারবে না। মনে রাখবেন সূর্য থেকে যে অতিবেগুনী রশ্মি বেরোয় তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ মেলানিন তৈরি হয়। আর এই অতিরিক্ত মেলানিন তৈরি হওয়ার কারণে ত্বকের রং-ই বদলে যেতে পারে। অতিবেগুনী রশ্মি থেকে ত্বক বাঁচাতে রোদে ছাতা ব্যবহার করুন। বিদেশে অবশ্য সানব্রেলা বলে ছাতা পাওয়া যায়। তাছাড়া ত্বকের যত্নে রয়েছে খাবারের বিশেষ ভূমিকা। নিচে উল্লেখিত জিনিসগুলো মিলিয়ে হাল্কা একটা নাস্তা জাতীয় খাবার তৈরি করে নিন। এ খাবার আপনার ত্বককে আরও পরিপুষ্ট করবে। ১ কাপ দই, ১টি কলা, আধা কাপ জাম, ৩ টেবিল চামচ আটা, ১ টেবিল চামচ ইস্ট, ১ টেবিল চামচ হেসিথিন, ১ চা চামচ দানাদার ভিটামিন সি, ডিমের আস্ত একটি কুসুম। পরিমাণমত জেলাটিন পাউডার। গন্ধ ও স্বাদ বর্ধক হিসেবে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।

0 comments:

Post a Comment