প্রকৃতির মাঝেই লুকিয়ে রয়েছে রূপচর্চার সব ধরণের উপাদান। দিন দিন রূপচর্চার জন্য এসব প্রাকৃতিক বা ভেষজ উপাদানের উপর নির্ভরতাও বাড়ছে। ভেষজ উপায়ে তৈরি রূপচর্চার উপকরণ বেছে নিন এবং আপনার ত্বক ও চুলকে সুন্দর রাখুন।
বহু প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছিল নানা রকম ভেষজ উপাদান। কিন্তু আধুনিকায়নের প্রভাবে ধীরে ধীরে মানুষ নির্ভরশীল হয়ে পড়ে নানা রকম রাসায়নিক দ্রব্যাদির উপর। কারণ এর ফলাফল অনেক দ্রুত পাওয়া যায়। কিন্তু একবার ভেবে দেখেছেন এসব রাসায়নিক পণ্য ব্যবহারের সুদুরপ্রসারী ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে। তবে সুখবর হলো মানুষ এখন অনেক সচেতন হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে আবার ভেষজ উপাদানের উপর নির্ভর করা হচ্ছে।
ত্বকের যন্ত নেয়ার জন্য হারবাল বা ভেষজ পদ্ধতি ব্যবহারের উপর আলোচনা শুরুর আগে নিজের ত্বক সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।
আপনার ত্বক সেনসিটিভ, শুষ্ক, তৈলাক্ত নাকি মিশ্র তা ভালো করে জানার জন্য আপনি নিজেই পরীক্ষা শুরু করে দিতে পারেন। সবার আগে এটি জানা জরুরী। কারণ তৈলাক্ত ত্বকের যা প্রয়োজন শুষ্ক ত্বকের তা প্রয়োজন হয় না, আবার ত্বক যদি সেনসিটিভ হয় তাহলে তার সব কিছু সহ্য হবে না।
এবার শুরু করা যাক। একটি টিসু পেপার বা ব্লটিং পেপার নিন। সকালে ঘুম থেকে উঠে টিসু বা ব্লটিং পেপার চেপে ধরুন। ত্বক তৈলাক্ত বা মিশ্র হলে তার ছাপ পড়বে পেপারে। ত্বক সেনসিটিভ কিনা বা তা কতটা সেটা বোঝা একটু কঠিন। তবে নিচের বেশকিছু বিষয় থেকেও আপনার ত্বকের ধরন সম্পর্কে জানতে পারবেন।
- যদি আপনার ত্বকে অ্যালার্জি প্রবণতা থাকে তাহলে বুঝবেন ত্বক শুষ্ক।
- চুল শুকনো হলে বুঝবেন ত্বকও শুষ্ক।
- খুব বেশি খুসকির সমস্যা থাকলে তাহলেও বুঝতে হবে ত্বক শুষ্ক।
- লেপ, কম্বল ইত্যাদিতে অ্যালার্জি থাকলে বা নতুন কিছু ব্যবহার করলে যদি অ্যালার্জির সমস্যা হয় তাহলে বুঝতে হবে ত্বক অবশ্যই শুকনো। তৈলাক্ত ত্বক বুঝবেন কিভাবে?
- ত্বকে যখন তেলতেলে ভাব ফুটে ওঠে বিশেষ করে নাক, কপাল নিয়ে যে অংশ “T” এর মতো আকার নেয় তখন বুঝতে হবে সেটা তৈলাক্ত ত্বক।
- তৈলাক্ত ত্বক-এ কানের পিছনে হাত দিলে তেলতেলে লাগে। আসলে এই তেল বের হয় সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে। আমাদের শরীরে শতকরা ৭০ ভাগ সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থাকে মুখে। মুখ তেলতেলে থাকা তৈলাক্ত ত্বক চেনার প্রধান উপায়।
- ব্রণ, ফুসকুড়ি সমস্যা তৈলাক্ত ত্বকে বেশি হয়। ত্বকে কালো ছোপেরও সমস্যা থাকে।
সেনসিটিভ ত্বক
- ত্বকে, চুলকানো, লাল হওয়া, জ্বালা করার সমস্যা হয় খুব বেশি।
- শুষ্ক ত্বকেরই আরেকটা দিক হল সেনসিটিভ হওয়া। এই ত্বকে কসমেটিক লাগানোর পর সমস্যা হয়।
- কখনও কখনও কোন কারণ ছাড়াই ত্বকে ইরিটেশন হতে পারে।।
বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা ও তার প্রতিকারের ঘরোয়া পদ্ধতিতে আসার আগে সব ত্বকেরই কিছু বিশেষ যত্নের কথা আগে জানা দরকার
- যে কোন ঋতুতে ত্বকের যত্ন নেওয়ার প্রথম ধাপ পরিচ্ছন্নতা
- যে ধরনের ত্বক হোক না কেন সাবান ব্যবহার করা উচিত নয়
- ত্বক ভালো রাখার জন্য প্রচুর জল খাওয়া দরকার। ত্বক আর্দ্র ও সজীব রাখতে জল সাহায্য করে
- স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। অবশ্যই তৈলাক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। এতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাবে। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পেলেই ত্বক সুন্দর হবে।
- শীতকালে অনেকেই তেল ব্যবহার করেন। নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মাখুন। কিছু ভুল ধারণা আছে অনেকের নারকেল তেল মাখলে ঠান্ডা লাগে। তাহলে বলি নারকেল তেল মাখলে ঠান্ডা লাগে না। যেমন সরষের তেল মাখলে শরীর গরম হয় না। কোন তেলই শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বদল ঘটাতে পারে না।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে শীতকালে বিভিন্ন ত্বকের কিছু সমাধান জেনে নিন
ত্বকের গুরুত্বপূর্ণ ৩টি ধাপ হল ক্লেনজিং, টোনিং, ময়শ্চারাইজিং। মুখ ভালো করে পরিষ্কার করা, টোনার ও ময়েশ্চারাইজার লাগানো। এ তিনটি সারা বছর করা খুবই দরকার।
শীতকালে বাইরের আবহাওয়ায় ধুলো, ময়লা, জীবাণু অনেক বেশী থাকে। ত্বক অন্য ঋতুর থেকে বেশি ময়লা হয়।।
শীতকালে বাইরের আবহাওয়ায় ধুলো, ময়লা, জীবাণু অনেক বেশী থাকে। ত্বক অন্য ঋতুর থেকে বেশি ময়লা হয়।।
- এই ত্বকের সমস্যা শীতে সবচেয়ে বেশী। শীতে এই ত্বক আরো বেশী শুষ্ক হয়ে যায় তাই এর যত্ন বিশেষ ভাবে দরকার।
- সারাদিনে দুই বার বা তিন বার গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন।
- সারাদিনে বা খুব ভালো হয় রাতে শুতে যাওয়ার আগে দুধের সঙ্গেঁ মধু মিশিয়ে হালকা ম্যাসাজ করে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। শুষ্কতা কমবে অনেকটাই।
- মধু, দই, ডিম, গাজরের রস একসঙ্গেঁ মিশিয়ে মুখে লাগান, ২৫ মিনিট পর আলতো করে ঘসে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩দিন করতে পারলে শুষ্কতা কমে যাবে।
- আমন্ড বাটা ও মধু দিয়ে প্যাক করে মুখে লাগান ১৫ মিনিট পর ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ৩ দিন করলে অনেক উপকার পাবেন।
0 comments:
Post a Comment